ভূমিকা:
শীতকাল মানেই ঠান্ডা, কাশি, গলা ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া আর হাঁচি-কাশির যন্ত্রণায় ভোগা—এই দৃশ্য প্রায় প্রতিটি ঘরেই দেখা যায়। ঠান্ডা আবহাওয়া, ধুলাবালি আর দূষণের কারণে আমাদের শরীর সহজেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। অনেকেই এই সময় কাশির সিরাপ বা ওষুধের ওপর নির্ভর করেন, কিন্তু জানেন কি? রান্নাঘরের সহজ কিছু উপকরণ দিয়েই আপনি তৈরি করতে পারেন এমন কিছু ঘরোয়া "কাড়া" বা হারবাল পানীয়, যা প্রাকৃতিক কাশির সিরাপের মতো কাজ করে!
![]() |
শীতে সর্দি-কাশি-গলা ব্যথায় ঘরোয়া টোটকা
এই ঘরোয়া কাড়াগুলো শুধু সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথা দূর করে না, বরং শরীরকে উষ্ণ রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শীতজনিত নানা অসুস্থতা থেকে শরীরকে রক্ষা করে। নিয়মিত এই কাড়া পান করলে ঋতু পরিবর্তনের সময়েও শরীর থাকবে সতেজ, গলা থাকবে পরিষ্কার, আর ঠান্ডা লাগার ভয় থাকবে না।
নিচে রইল ঘরোয়া উপকরণে তৈরি তিনটি অসাধারণ ও কার্যকর কাড়ার রেসিপি
১. আদা-তুলসি কাড়া
উপকরণ:
-
আদা কুচি — ১ চা চামচ
-
তুলসি পাতা — ৫-৬টি
-
গোলমরিচ — ৩-৪টি
-
পানি — ১ কাপ
-
মধু — ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)
তৈরির নিয়ম:
এক কাপ পানি ফুটে এলে তাতে আদা, তুলসি ও গোলমরিচ দিন। ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিন। হালকা ঠান্ডা হলে মধু মিশিয়ে পান করুন।
এটি গলা ব্যথা দূর করে, নাক পরিষ্কার রাখে ও শরীরের ভেতরের ঠান্ডা কাটায়।
২. হলুদ-দারুচিনি কাড়া
উপকরণ:
-
হলুদ গুঁড়া — ১/২ চা চামচ
-
দারুচিনি — ১ টুকরো
-
লবঙ্গ — ২টি
-
আদা — ১ টুকরো
-
পানি — ১ কাপ
তৈরির নিয়ম:
সব উপকরণ একসাথে ফুটিয়ে ৮–১০ মিনিট রান্না করুন। এরপর ছেঁকে গরম গরম পান করুন।
👉 এই কাড়া শরীরের ব্যথা কমায়, সর্দি-কাশি দূর করে ও প্রতিদিন সকালে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৩. লেবু-মধু-কালোজিরা কাড়া
উপকরণ:
-
কালোজিরা গুঁড়া — ১/২ চা চামচ
-
লেবুর রস — ১ চা চামচ
-
মধু — ১ চা চামচ
-
গরম পানি — ১ কাপ
তৈরির নিয়ম:
গরম পানিতে সব উপকরণ মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়িয়ে পান করুন।
👉 এটি প্রাকৃতিক ডিটক্স পানীয় হিসেবে কাজ করে, গলা নরম রাখে এবং কাশির জ্বালা দ্রুত কমায়।
পরামর্শ:
-
কাড়া সবসময় গরম গরম পান করুন।
-
দিনে ১–২ বার নিয়মিত খেলে ভালো ফল পাবেন।
-
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে, তারা খালি পেটে না খাওয়াই ভালো।
শীতের সময় নিয়মিত এই তিন রকম কাড়া খেলে সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা বা ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা থাকবে না। এটি শরীরের ভেতর থেকে উষ্ণতা জোগায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্ত করে এবং আপনাকে রাখবে প্রাণবন্ত ও সুস্থ।
